চোখ ভালো রাখার দোয়া ও ইসলামিক গাইড ২০২৫

চোখ ভালো হওয়ার দোয়া ও ইসলামিক পরামর্শ
চোখের দোয়া ও অনুবাদ -
চোখের দোয়া বা চোখের জন্য হিফাজতের দোয়াগুলো সাধারণত চোখের রোগ, জ্বালা, বা বদনজরের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পড়া হয়। নিচে একটি প্রসিদ্ধ চোখের হেফাজতের দোয়া ও তার বাংলা অনুবাদ দেওয়া হলো:
🕋 চোখের দোয়া (আরবি):
اللّهُمّ مَتِّعْنِي بِسَمْعِي وَبَصَرِي، وَاجْعَلْهُمَا الْوَارِثَ مِنِّي، وَانْصُرْنِي عَلَى مَنْ ظَلَمَنِي، وَأَرِنِي فِيهِ ثَأْرِي
📖 বাংলা অনুবাদ:
“হে আল্লাহ! আমার শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তিকে আমার জন্য উপকারী করে দাও, এবং এই দুটি শক্তিকে আমার জীবনের শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখো। যারা আমার উপর জুলুম করে, তাদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করো এবং তাদের মাধ্যমে আমার প্রতিশোধের দৃশ্য আমাকে দেখাও।”
✨ চোখ ভালো রাখার জন্য আরও ছোট একটি দোয়া:
رَبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَل لِّي مِن لَّدُنكَ سُلْطَانًا نَّصِيرًا
বাংলা অর্থ:
“হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সত্য সহকারে প্রবেশ করাও এবং সত্য সহকারে বের করো, এবং আমাকে তোমার পক্ষ থেকে সাহায্যকারী ক্ষমতা দান করো।”
👉 এটি বদনজর থেকেও হেফাজতের জন্য উপকারি।
✅ চোখে সমস্যা হলে পড়া যেতে পারে এমন কিছু আয়াত:
-
সূরা আল-ফাতিহা (৭ বার ফুঁ দিয়ে চোখে দম করা)
-
আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারা, আয়াত ২৫৫)
-
সূরা আল-ইখলাস, আল-ফালাক, এবং আন-নাস (৩ বার করে পড়ে চোখে দম দেওয়া)
রাসূল (স) কী দোয়া পড়তেন চোখের জন্য?
রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর জীবন থেকে পাওয়া সহিহ হাদীস অনুযায়ী, তিনি বিভিন্ন অসুস্থতা বা কষ্ট হলে নিজে ও সাহাবিদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু দোয়া পাঠ করতেন। চোখের সমস্যা বা ব্যথা হলে তিনি বিশেষ কিছু দোয়া পড়তেন যা চোখের আরোগ্য ও সুরক্ষার জন্যও উপযোগী।
✅ ১. চোখের জন্য রাসূল ﷺ যে দোয়া পড়তেন:
📜 হাদীস:
উসমান ইবনু হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক অন্ধ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট এসে দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার দোয়া চাইলেন। রাসূল ﷺ তাকে বললেন:
"তুমি চাও তো আমি তোমার জন্য দোয়া করি, আর চাও তো ধৈর্য ধরো — এটা তোমার জন্য উত্তম।"
তিনি বললেন: “দয়া করে আপনি আমার জন্য দোয়া করুন।”
তখন নবী ﷺ তাকে এই দোয়া শিখিয়ে বললেন:
🌿 চোখের দোয়া (অন্ধ ব্যক্তি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার দোয়া):
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ نَبِيِّ الرَّحْمَةِ، إِنِّي تَوَجَّهْتُ بِكَ إِلَى رَبِّي فِي حَاجَتِي هَذِهِ لِتُقْضَى لِي، اللَّهُمَّ فَشَفِّعْهُ فِيَّ
📖 বাংলা অনুবাদ:
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাই এবং আপনার কাছে সুপারিশ করছি আপনার নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর মাধ্যমে, যিনি রহমতের নবী। আমি আমার প্রয়োজন পূরণের জন্য তাঁকে (নবীকে) মাধ্যমে হিসেবে নিয়ে আপনার দিকে ফিরে এসেছি, হে আল্লাহ! তাঁকে আমার ব্যাপারে সুপারিশকারী করে দিন।”
🕌 হাদীস সূত্র:
📚 [তিরমিযী 3578, হাকিম ও তাবারানী – সহিহ সনদে বর্ণিত]
🧿 অন্যান্য সুন্নাহ অনুযায়ী পড়া দোয়া:
🤲 বদনজর ও চোখের যন্ত্রণা হলে:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উচ্চারণ: A'udhu bikalimātillāhit-tāmmati min kulli shayṭānin wa hāmmah wa min kulli 'aynin lāmmāh.
বাংলা অনুবাদ:
“আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর মাধ্যমে আশ্রয় চাই প্রতিটি শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং ক্ষতিকর দৃষ্টি (বদনজর) থেকে।”
📚 (সহিহ বুখারী, হাদিস: 3371)
💡 করণীয় (চোখের সমস্যা বা ব্যথা হলে):
-
এই দোয়াগুলো পড়া
-
হাত দিয়ে চোখে দম দেওয়া (যেমন রাসূল ﷺ করতেন)
-
পানি পড়ে ফুঁ দিয়ে চোখে লাগানো
হাদিসে চোখের স্বাস্থ্য
হাদীসে চোখের স্বাস্থ্য ও দৃষ্টিশক্তি নিয়ে সরাসরি কিছু বক্তব্য পাওয়া যায়, যেগুলো থেকে আমরা চোখের গুরুত্ব, যত্ন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর চর্চা সম্পর্কে মূল্যবান দিকনির্দেশনা পাই।
🕋 হাদীসে চোখের গুরুত্ব ও দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে কিছু উল্লেখযোগ্য বর্ণনা
✅ ১. দৃষ্টিশক্তি আল্লাহর নেয়ামত
📜 হাদীস:
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
“আল্লাহ বলেন, আমি যখন আমার কোন বান্দার দুই প্রিয় জিনিস (চোখ) কেড়ে নিই এবং সে ধৈর্য ধারণ করে, তবে আমি তার বিনিময়ে তাকে জান্নাত দান করব।”
📚 সহিহ বুখারী: হাদীস 5653
🔎 উপকারিতা:
-
চোখ দেহের অত্যন্ত প্রিয় অঙ্গ।
-
এটির গুরুত্ব এতটাই বেশি যে, চোখ হারিয়ে ধৈর্য ধরলে জান্নাত পর্যন্ত পাওয়া যায়।
✅ ২. চোখের বদনজর থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া
📜 হাদীস:
“বদনজর সত্য। যদি কোনো কিছু তাকদীরের বাইরে কিছু করতে পারত, তবে তা হতো বদনজর।”
📚 সহিহ মুসলিম: হাদীস 2188
🔎 উপকারিতা:
-
বদনজর একটি বাস্তব বিষয়।
-
চোখের মাধ্যমে হিংসা বা অহংকারপ্রসূত দৃষ্টিও ক্ষতি করতে পারে।
✅ ৩. চোখে সমস্যা হলে কী দোয়া করা যেত?
📜 হাদীস:
রাসূল ﷺ চোখে কষ্ট পেলে বলতেন:
اللّهُمّ مَتِّعْنِي بِبَصَرِي، وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنِّي
উচ্চারণ: Allahumma matti‘ni bi-baṣarī, waj‘alhu al-wāritha minnī.
বাংলা অনুবাদ:
“হে আল্লাহ! আমাকে আমার দৃষ্টিশক্তির উপকার ভোগ করতে দিন এবং এটাকে আমার সাথে রেখে দিন (অর্থাৎ আমার দৃষ্টিশক্তিকে হেফাজত করুন)।”
✅ ৪. রাসূল ﷺ রাতে ঘুমানোর সময় চোখে হাত দিয়ে দোয়া পড়তেন
📜 হাদীস:
রাসূল ﷺ ঘুমাতে যাওয়ার সময় তিন কুল (সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস) পড়ে তাঁর হাতের উপর ফুঁ দিতেন, তারপর সারা শরীরে হাত বুলাতেন, বিশেষ করে মুখমণ্ডল ও চোখে।
📚 সহিহ বুখারী: হাদীস 5017
🔎 উপকারিতা:
-
ঘুমানোর আগে এই আমল করলে চোখ ও শরীর নিরাপদ থাকে।
-
চোখের সুস্থতায় সুন্নাহভিত্তিক রুটিন।
🧿 চোখের সুস্থতা বজায় রাখতে সুন্নাহসম্মত কিছু করণীয়:
-
বদনজরের দোয়া পাঠ করা
-
সূরা কুল ৩টি (ইখলাস, ফালাক, নাস) প্রতিদিন পড়া
-
চোখে আযান, আয়াতুল কুরসি ও দোয়া পড়ে ফুঁ দেওয়া
-
সুন্নাহ অনুযায়ী ঘুমের রুটিন মেনে চলা
-
হালাল খাবার খাওয়া (চোখের ওপর প্রভাব ফেলে)
📌 চোখের যত্ন ও নিরাপত্তার জন্য ইসলামিক চর্চা শুধু আত্মিক সুরক্ষা নয়, বরং শারীরিক দিক থেকেও অত্যন্ত উপকারী।
দোয়াগুলো কখন পড়বেন?
চোখের জন্য যেসব দোয়া বা আমল বলা হয়েছে, সেগুলো সঠিক সময়ে পড়লে বেশি উপকার পাওয়া যায়। নিচে সময় ও পরিস্থিতিভিত্তিক ভাবে দোয়াগুলোর সময়সূচি তুলে ধরা হলো:
🕰️ চোখের দোয়া কখন পড়বেন?
১. 🧿 চোখে ব্যথা বা অসুবিধা হলে
✅ দোয়া:
اللّهُمّ مَتِّعْنِي بِبَصَرِي، وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنِّي
বাংলা: হে আল্লাহ! আমাকে আমার দৃষ্টিশক্তির উপকার ভোগ করতে দিন এবং এটাকে আমার জন্য হেফাজত করুন।
📌 কখন পড়বেন:
-
চোখে ব্যথা, ঝাঁঝ, বা দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে।
-
চোখের কোনো সমস্যায় নিয়মিত ফজর ও মাগরিবের পর।
২. 🧿 বদনজর বা হিংসাত্মক দৃষ্টির ভয় থাকলে
✅ দোয়া:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
বাংলা: আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর মাধ্যমে, ক্ষতিকর সব দৃষ্টি থেকে।
📌 কখন পড়বেন:
-
ঘর থেকে বের হওয়ার সময়।
-
কারো অতিরিক্ত প্রশংসা শুনলে বা সন্দেহ হলে।
-
বাচ্চাদের ওপর ফুঁ দিয়ে চোখে-মুখে হাত বুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
৩. 🌙 রাতে ঘুমানোর সময়
✅ আমল:
-
সূরা ইখলাস, ফালাক, এবং নাস পড়ে,
-
দুই হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে,
-
পুরো শরীরে, বিশেষ করে মুখ ও চোখে হাত বুলানো।
📌 কখন করবেন:
-
প্রতিরাতেই ঘুমাতে যাওয়ার আগে।
-
রোগব্যাধি, জিন বা বদনজর থেকে সুরক্ষার জন্য।
৪. 👁️🗨️ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে বা উন্নতির জন্য
✅ দোয়া (অন্ধ ব্যক্তির দোয়া):
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّكَ...
📌 কখন পড়বেন:
-
প্রতিদিন ১-৩ বার, চাইলেই ৭ বার।
-
বিশেষ করে ফজরের পর বা দোয়া কবুলের সময় (বৃষ্টির সময়, সেজদার সময়, ইফতারের সময়)।
🧼 সাধারণ করণীয় (চোখের যত্নে)
সময় | আমল বা দোয়া |
---|---|
ফজর ও মাগরিব পর | চোখের হেফাজতের দোয়া ৩ বার করে |
ঘুমানোর আগে | ৩ কুল পড়ে ফুঁ দিয়ে চোখ-মুখে হাত বুলানো |
অসুস্থ হলে | আল্লাহর নাম নিয়ে দোয়া ও চোখে দম করা |
চোখে হিংসার ভয় | বদনজরের দোয়া ও আয়াতুল কুরসি, ফালাক, নাস |
✅ অতিরিক্ত টিপস:
-
দোয়া পড়ার সময় চোখে হাত রাখা সুন্নাহভিত্তিক একটি পদ্ধতি।
-
চোখে ফুঁ দেয়ার আগে দোয়া পড়ে ধীরে ধীরে চোখে ও কপালে হাত বুলাতে পারেন।
-
এসব আমল নফল ও সুন্নাহ ভিত্তিক, চিকিৎসার বিকল্প নয়, বরং আত্মিক ও দৈহিক সুরক্ষায় সহায়ক।
কমন ভুল
চোখের দোয়া ও ইসলামিক আমলগুলোর ক্ষেত্রে মানুষ অনেক সময় কিছু কমন (সাধারণ) ভুল করে থাকে, যেগুলো চোখের সুস্থতা বা দোয়ার প্রভাবের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হতে পারে। নিচে এসব ভুল ও সংশোধনী দেওয়া হলো:
❌ চোখের দোয়া বা আমলে সাধারণ ভুল এবং ✔️ সঠিক পদ্ধতি:
❌ ১. ভুল: দোয়া না বুঝেই শুধু আরবিতে পড়া
✔️ সঠিক: দোয়া অবশ্যই আরবিতে পড়া উত্তম, কিন্তু অর্থ না জানলে খুশু-খুযু (মনোযোগ) হয় না।
📌 সদা দোয়ার বাংলা অনুবাদ বুঝে নেওয়া উচিত।
❌ ২. ভুল: শুধু দোয়া পড়লেই হবে, চিকিৎসা দরকার নেই
✔️ সঠিক: ইসলাম দোয়া ও চিকিৎসা দুটোকেই গুরুত্ব দিয়েছে।
📚 রাসূল ﷺ বলেন:
“আল্লাহ তাআলা এমন কোনো রোগ দেননি যার জন্য ওষুধ সৃষ্টি করেননি।”
(মুসলিম: 2204)
📌 তাই চোখে সমস্যা হলে দোয়া করুন সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
❌ ৩. ভুল: বদনজরের দোয়া শুধু বাচ্চাদের জন্য
✔️ সঠিক: বড়দেরও বদনজর হতে পারে।
📌 নারী, পুরুষ, সুন্দর চেহারা, চাকরি, গাড়ি, সম্পদ — সব কিছুই বদনজরের ঝুঁকিতে পড়ে।
❌ ৪. ভুল: দোয়া পড়লেও কখনো নিয়মিত না পড়া
✔️ সঠিক: দোয়ার প্রভাব পেতে নিয়মিত আমল করতে হয়।
📌 ফজর ও মাগরিবের পর অথবা রাতে ঘুমানোর আগে সময় ঠিক করে নিন।
❌ ৫. ভুল: দোয়া না পড়ে তাবিজ-কবচের ওপর ভরসা করা
✔️ সঠিক: রাসূল ﷺ শরীয়তের বাইরে কোনো তাবিজ-কবচ নিষেধ করেছেন।
📚 হাদিস:
“যে ব্যক্তি তাবিজ ব্যবহার করল, সে শিরকে লিপ্ত হলো।”
(আহমদ, হাদিস: 3604)
📌 দোয়া ও কুরআনের আয়াত পড়াই আসল চিকিৎসা।
❌ ৬. ভুল: দোয়ার পর শরীরে/চোখে দম না করা
✔️ সঠিক: অনেক দোয়া (যেমন – সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস, বদনজরের দোয়া) পড়ে হাত দিয়ে চোখে-মুখে বুলানো সুন্নাহ।
✅ চোখের দোয়া ও আমলে সফল হতে চাইলে:
করণীয় | ব্যাখ্যা |
---|---|
দোয়ার অর্থ বুঝে পড়া | মনোযোগ বাড়ায়, দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বাড়ায় |
নিয়মিত পড়া | সুরক্ষা স্থায়ী হয় |
চিকিৎসা ও দোয়া একসাথে চালানো | শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ |
শিরক থেকে দূরে থাকা | দোয়ার প্রভাব টিকে থাকে |
সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা | বরকত ও হেফাজত নিশ্চিত হয় |